রোগের নামঃ দাদ বা স্ক্যাব (Scab) রোগ
রোগের কারণঃ এলসিনোই ফসেটি (Elsinoe fawcetti) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ লেবুগাছের মৃত অংশে এস্কোস্পোর থাকে।
উপযুক্ত আবহাওয়ায় (তাপমাত্রা ১৬-২৩ ডিগ্রি সেঃ ও ৬৬-১০০% আর্দ্রতা)
এস্কোস্পোর অংকুরোদগমের মাধ্যমে কনিডিয়া উৎপন্ন করে। বৃষ্টির ঝাপটায়
কনিডিয়া গাছের পাতা, ডাল ও ফলে ছড়িয়ে পড়ে এবং আর্দ্র স্থানে আক্রমণ করে।
আক্রমণের জন্য উপযোগী তাপমাত্রা ১৬-২৩ ডিগ্রি সেঃ। অতিরিক্ত শিশির, কুয়াশা
এবং আর্দ্রতা রোগ বিস্তারের জন্য খুবই অনুকূল।
রোগের লক্ষণঃ পাতায়, কচি ডালে ও ফলে এ রোগ হয়।
কচি পাতার উপর ছোট ছোট ফিকে কমলা রংগের দাগ পড়ে।
রোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে দাগ আঁচিলের ন্যায় উঁচু হয়ে উঠে।
আঁচিলের নীচে পাতার উল্টো দিকে কিছুটা ডেবে যায়।
আঁচিলের উপর ফিকে হলদে কমলা রঙের মামড়ি পড়তে দেখা যায় এবং ক্রমে তার রং ধূসর হয়ে যায়।
রোগের ব্যাপক প্রসার ঘটলে ফলে কর্কের ন্যায় খসখসে হয়ে বিশ্রী দেখায়।
রোগের শেষের দিকে আঁচিল ফেটে যেতে পারে।
মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ফল শক্ত হয় ও পরিপক্ক হওয়ার আগেই ঝরে পড়ে।
রোগের প্রতিকার
নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে।
গাছ থেকে পাতা, ডালপালা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
গাছে রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে কপার অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের
ছত্রাকনাশক (যেমন-কুপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে
অথবা কার্বেন্ডাজিম + মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-কমপেনিয়ন ৭৫
ডব্লিউপি) ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩-৪ বার গাছে স্প্রে করতে
হবে।
রোগের নামঃ আগা মরা বা এনথ্রাকনোজ (Die back or Anthracnose) রোগ
রোগের কারণঃ কোলেটোট্রিকাম গ্লোওস্পোরোয়ডিস (Colletotrichum gloeosporioides) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ এ রোগের ছত্রাক মাটিতে ও গাছের
পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বসন্তকালে বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে কালো
বিন্দুগুলো ফেটে কনিডিয়াম বের হয়। বৃষ্টির ছিটা ও বাতাসের সাহয্যে আক্রান্ত
গাছ থেকে কনিডিয়াম ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্য গাছকে আক্রমণ করে।
রোগের লক্ষণ
পুরাতন পাতায় ঈষৎ সবুজ রংগের দাগ পড়ে।
ক্রমে দাগ বাদামী হয়ে যায়।
রোগ পাতার আগায় ও কিনারায় বেশী হয়।
ডালও আক্রান্ত হয়ে আগা থেকে শুরু করে নীচের দিকে ধীরে ধীরে শুকাতে থাকে।
ডাল শুকানোর সাথে সাথে পাতা ঝরে পড়ে।
এ জন্য গাছে অনেক পত্রবিহীন মরা, অর্ধমৃত অথবা রোগাটে ডাল দেখতে পাওয়া যায়।
আক্রান্ত ফলের খোসায় শক্ত কুঁচকানো বাদামী দাগ দেখা যায়।
আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করলে তাতে পঁচন দেখা যায়।
রোগের প্রতিকার
নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে।
গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতি ঘন ডাল পালা ছাঁটাই করে পরিস্কার করে দিতে হবে।
আক্রান্ত অংশ ছাটার সময় দাগের নীচেও কিছুটা সুস্থ অংশ কেটে ফেলতে হবে
এবং কাটা অংশে বর্দোপেষ্ট (প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০
গ্রাম চুন) লাগাতে হবে।
গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
গাছকে সতেজ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সুষম সার শিকড়ের চারপাশে দিয়ে পানি সেচ দিতে হবে।
প্রোপিকোনাজোল গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার
পানিতে ০.৫ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে গাছে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে
করতে হবে
লেবু পাতার ছোট সুড়ঙ্গকারী পোকা :
লিফ মাইনার বা সুড়ঙ্গকারী পোকার কীড়াগুলো পাতার উপত্বকের ঠিক নিচের সবুজ
অংশ খেয়ে আকা-বাঁকা সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে গাছের পাতার
কিনারার দিক মুড়ে পুত্তলিতে পরিণত হয়। আক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে গাছের
পাতা কুঁকড়ে যায় ও বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে ঝরে পড়ে। আগস্ট ও অক্টোবর মাসে এ
পোকার আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। প্রতিকার হিসেবে পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করতে হবে।
সম্ভব হলে ডিম ও কীড়াসহ পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। গ্রীষ্ম ও
শরৎকালে নতুন পাতা গজানোর সময় কচি পাতায় স্পর্শ ও পাকস্থলী বিষ
(সাইপারমেথ্রিন ১০ ইসি, ফেনিট্রোথিয়ন ৫০ ইসি) অথবা অন্তর্বাহী বা প্রবাহমান
বিষ (ডাইমেথয়েট ৪০ ইসি, কার্বোসালফান ২০ ইসি) জাতীয় কীটনাশক ২ মিলি/লিটার
পানি বা ১ গ্রাম/লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার গাছে
ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।
উত্তর সমূহ
রোগের নামঃ দাদ বা স্ক্যাব (Scab) রোগ রোগের কারণঃ এলসিনোই ফসেটি (Elsinoe fawcetti) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। রোগের বিস্তারঃ লেবুগাছের মৃত অংশে এস্কোস্পোর থাকে। উপযুক্ত আবহাওয়ায় (তাপমাত্রা ১৬-২৩ ডিগ্রি সেঃ ও ৬৬-১০০% আর্দ্রতা) এস্কোস্পোর অংকুরোদগমের মাধ্যমে কনিডিয়া উৎপন্ন করে। বৃষ্টির ঝাপটায় কনিডিয়া গাছের পাতা, ডাল ও ফলে ছড়িয়ে পড়ে এবং আর্দ্র স্থানে আক্রমণ করে। আক্রমণের জন্য উপযোগী তাপমাত্রা ১৬-২৩ ডিগ্রি সেঃ। অতিরিক্ত শিশির, কুয়াশা এবং আর্দ্রতা রোগ বিস্তারের জন্য খুবই অনুকূল। রোগের লক্ষণঃ পাতায়, কচি ডালে ও ফলে এ রোগ হয়।
- কচি পাতার উপর ছোট ছোট ফিকে কমলা রংগের দাগ পড়ে।
- রোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে দাগ আঁচিলের ন্যায় উঁচু হয়ে উঠে।
- আঁচিলের নীচে পাতার উল্টো দিকে কিছুটা ডেবে যায়।
- আঁচিলের উপর ফিকে হলদে কমলা রঙের মামড়ি পড়তে দেখা যায় এবং ক্রমে তার রং ধূসর হয়ে যায়।
- অতিশয় রোগাক্রান্ত পাতা অত্যধিক মাত্রায় কুঁচকে যায় ও বিকৃত হয়ে যায়।
- রোগের ব্যাপক প্রসার ঘটলে ফলে কর্কের ন্যায় খসখসে হয়ে বিশ্রী দেখায়।
- রোগের শেষের দিকে আঁচিল ফেটে যেতে পারে।
- মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ফল শক্ত হয় ও পরিপক্ক হওয়ার আগেই ঝরে পড়ে।
রোগের প্রতিকার- নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে।
- গাছ থেকে পাতা, ডালপালা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
- গাছে রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে কপার অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের
ছত্রাকনাশক (যেমন-কুপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে
অথবা কার্বেন্ডাজিম + মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-কমপেনিয়ন ৭৫
ডব্লিউপি) ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩-৪ বার গাছে স্প্রে করতে
হবে।
- রোগের নামঃ আগা মরা বা এনথ্রাকনোজ (Die back or Anthracnose) রোগ
রোগের কারণঃ কোলেটোট্রিকাম গ্লোওস্পোরোয়ডিস (Colletotrichum gloeosporioides) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ এ রোগের ছত্রাক মাটিতে ও গাছের
পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বসন্তকালে বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে কালো
বিন্দুগুলো ফেটে কনিডিয়াম বের হয়। বৃষ্টির ছিটা ও বাতাসের সাহয্যে আক্রান্ত
গাছ থেকে কনিডিয়াম ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্য গাছকে আক্রমণ করে।
রোগের লক্ষণ
- পুরাতন পাতায় ঈষৎ সবুজ রংগের দাগ পড়ে।
- ক্রমে দাগ বাদামী হয়ে যায়।
- রোগ পাতার আগায় ও কিনারায় বেশী হয়।
- ডালও আক্রান্ত হয়ে আগা থেকে শুরু করে নীচের দিকে ধীরে ধীরে শুকাতে থাকে।
- ডাল শুকানোর সাথে সাথে পাতা ঝরে পড়ে।
- এ জন্য গাছে অনেক পত্রবিহীন মরা, অর্ধমৃত অথবা রোগাটে ডাল দেখতে পাওয়া যায়।
- মরা ডালে অসংখ্য কালো কালো বিন্দুর ন্যায় এসারভূলাস উৎপন্ন হয়।
- এ সময় গাছে ফল থাকলে রোগ বোঁটাতেও সংক্রমিত হয়।
- আক্রান্ত বোঁটা দূর্বল হয়ে ফল ঝরে পড়ে।
- আক্রান্ত ফলের খোসায় শক্ত কুঁচকানো বাদামী দাগ দেখা যায়।
- আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করলে তাতে পঁচন দেখা যায়।
রোগের প্রতিকার- নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে।
- গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতি ঘন ডাল পালা ছাঁটাই করে পরিস্কার করে দিতে হবে।
- আক্রান্ত অংশ ছাটার সময় দাগের নীচেও কিছুটা সুস্থ অংশ কেটে ফেলতে হবে
এবং কাটা অংশে বর্দোপেষ্ট (প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০
গ্রাম চুন) লাগাতে হবে।
- গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
- গাছকে সতেজ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সুষম সার শিকড়ের চারপাশে দিয়ে পানি সেচ দিতে হবে।
- প্রোপিকোনাজোল গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার
পানিতে ০.৫ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে গাছে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে
করতে হবে
লেবু পাতার ছোট সুড়ঙ্গকারী পোকা : লিফ মাইনার বা সুড়ঙ্গকারী পোকার কীড়াগুলো পাতার উপত্বকের ঠিক নিচের সবুজ অংশ খেয়ে আকা-বাঁকা সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে গাছের পাতার কিনারার দিক মুড়ে পুত্তলিতে পরিণত হয়। আক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে গাছের পাতা কুঁকড়ে যায় ও বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে ঝরে পড়ে। আগস্ট ও অক্টোবর মাসে এ পোকার আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। প্রতিকার হিসেবে পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করতে হবে। সম্ভব হলে ডিম ও কীড়াসহ পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। গ্রীষ্ম ও শরৎকালে নতুন পাতা গজানোর সময় কচি পাতায় স্পর্শ ও পাকস্থলী বিষ (সাইপারমেথ্রিন ১০ ইসি, ফেনিট্রোথিয়ন ৫০ ইসি) অথবা অন্তর্বাহী বা প্রবাহমান বিষ (ডাইমেথয়েট ৪০ ইসি, কার্বোসালফান ২০ ইসি) জাতীয় কীটনাশক ২ মিলি/লিটার পানি বা ১ গ্রাম/লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।